চুপ কইরা আছি, বলাতে কিছু যায় আসে না, উল্টা ব্যাকল্যাশ আসবে, কাউয়া ক্যাচাল লাগবে, ভালো লাগে না।
দেখেন, শিল্পের কোন জাত, ধর্ম, দেশ, সীমানা নাই, হইতে পারে না। রিসেন্টলী যেইটা নিয়ে লাগছে, সীমানা, কাটাতারের বেড়া এগুলান এর আয়ু অতি অল্প। এই বাংলাদেশ, আমাদের সীমান্ত লাস্ট ১০০ বছরে কতবার চেঞ্জ হইছে চিন্তা করেন তো। এগুলান টিকে না, সেইম থাকে না বেশীদিন। ফ্যাক্ট কইতেছি, সেন্টি খায়েন না।
অন্যদিকে আর্ট, ক্লাসিক্যাল আর্ট মরে না। যেই ফর্মেই হোক, ৫০০ বছর আগের পেইন্টিং হোক, সেই বোবা সিনেমার যুগের চার্লি চ্যাপলিনের সিনেমা হোক, রেনেসানস সময়ের মোজার্টের মিউজিক হোক বা জুল ভার্নের লেখা সাইন্স ফিকশন হোক অথবা রবীন্দ্রনাথ এর লেখা কাব্য।
আর্ট রে আপনি খাচায় বন্দী করতে পারবেন না। ফ্যাশনের মত সিম্পল ফর্মের আর্ট ও ছরায় যায়, আর্ট রে ছড়ানো বন্ধ করা অসম্ভব। প্যারিস ফ্যাশন উইকের ডিজাইন দুইমাস পর আপনি নিউ মার্কেটে পায়া যাবেন। মিউজিকের মত আর্ট এখন তো ইনস্ট্যান্ট এক্সেস ইন্টারনেটের কল্যানে।
আর্ট আপনারে টানবেই, আপনি বিশাল লেভেলের সাইকোপ্যাথ হইলেও আর্ট রে এরাইতে পারবেন না। পৃথিবীর ড্যাঞ্জারাস মানুষ দের লিস্ট করতে গেলে তাদের ও পছন্দের গায়ক ছিলো কেউ, পছন্দের সিনেমা ছিলো। আপনার ও আছে, আমার ও আছে।
আর্টের জাত ও নাই। ভাষা আলাদা হইতে পারে, স্প্যানিশ গায়ক কারো চোখে হারায় গেছে, আর বাংলাদেশী আর্টিস্ট বোরখা পড়া মেয়ের চোখ দেখে পাগল হইছে একি কথা। দান্তে আলেঘেরী বড় প্রেমিক না আমাদের হাসন রাজা, এইটা নিয়া আপনি আমি কয়েক মাস ডিবেট করতে পারবো, সঠিক এন্সার বাইর হবে না তো।
রবীন্দ্রনাথ রে আটকানোর চেষ্টা কইরেন না। নর্থ কোরিয়ান পাগলা টা এত সেন্সর দিয়াও সাউথ কোরিয়ান ইন্ডাস্ট্রি আটকাইতে পারতেছে না, চাইনিজ টা সবকিছু ব্যান করেও হলিউড এর সিনেমা আটকাইতে পারতেছে না আর ইন্টারনেটের যুগে আপনি রবীন্দ্রনাথ রে রিপ্লেস করবেন ব্যাপার টা চিন্তা করাও ফানি।
এইটা নিয়ে একটা সিনেমা হইতে পারে, যেইখানে একজন ডিক্টেটর তার দলবল নিয়ে ঘোষনা দিলো “ঐ ব্যাটা ঠাকুর রে ব্যান কর”, তারপর তার বইপত্র সব নষ্ট করে ফেলা হইলো, সেন্সর লাগানো হইলো। সিনেমার লাস্ট সিনে গভীর কষ্ট অভিমানে থাকা এক যুবক অনেক উচু এক পাহাড়ের চুড়ায় যেয়ে কানে হেডফোন লাগায় শুনতে থাকলো ” আমি বহু বাসনায় প্রানপনে চাই, বঞ্চিত করে বাচালে মোরে” এবং ডিক্টেটর এর ঠোলা বাহিনী তাকে সেখানে যেয়ে ধরে নিয়ে গেলো ডিক্টেটর এর সামনে
– স্যার এই ব্যাটা ঐ ঠাকুর এর গান শূনতেছিলো।
= বলো কি হে মন্ত্রী ! হিরক রাজার রাজ্যে এ তো ঘোর অন্যায়। কিহে বেয়াদপ, তুমি আইন মানো নাই ক্যান?
অভিমানের ওজনে আর মোহ ত্যাগ করে ফেলা অভিযুক্ত যুবক হাহা হা করে হেসে উঠবে।। মৃত আর্টিস্ট ও বিকট শব্দে হেসে উঠবেন, তারা জানেন, আর্ট মরে না।