নাকি মানুষের উপরে আর কিছু নাই?

মিথুন ভাইরে দুইবারের বেশী কল দেওয়া নিষেধ, ফোনে না পায়া খুজতে খুজতে তারে যেয়ে পাইলাম সেই পার্কের মোড়ের শহীদের চায়ের দোকানে। এই দোকানে বসলে মিথুন ভাইয়ের নাকি বাকের ভাই বাকের ভাই ফিল আসে।

আমারে দেখে খানিক খুশীই হইলেন বোধকরি, বইসা মেঘে ঢাকা আকাশ আর চিনি ছাড়া চা খাইতেছিলেন, চেহারা সুরত দেখে মনে হইলো আজকে ভাইয়ের মন খোলা আছে।

মিথুন ভাইয়ের মন আলীবাবা গুহার মত, সেইখানে জ্ঞ্যানের মনিমুক্তার কমতি নাই, বাট চিচিং ফাক এর মত সঠিক পাসোয়ার্ড না জানলে সেইখান থেকে কিছু বাইর করা কঠিন।

মিথুন ভাই কইলো বস, ফোন দিতেছিলি কেন?

– মিথুন্দা, তোমার যে জীবন যৌবন বৃথা যাইতেছে, তা নিয়া ভাবলা কিছু? ছোট ভাইয়েরাও তো বাবা টাবা হইয়া গেলো। আজকে তো আবার ইকবালের বিয়া, যাবা না তুমি?

= ভালো কথা মনে করছিস শিমুল। ফুয়াদ ভাইয়ের বন্য এলবামের একটা গানের ইন্ট্রোতে একটা লাইন ছিলো রে, “যৌবন আমার লাল টমেটো”, শুনছিলি? মনে আছে?

– হ, আমার সব মনে থাকে ভাই। ফুয়াদ ভাই তো ইদানিং স্পটিফাই ফাটায় দিতেছে, শুনবা?

= না না, ঐ যৌবন যে তার লাল টমেটো, আমার সেই গান টা দরকার, ঐটার পুরা লিরিক্স টার অর্থ জানা দরকার, আসলে লেখক কি মিনিং করছে, পুরা পিকচার উপর থেকে জুম করে না দেখলে তো মিনিং বুঝবো না। মিনিং না বুঝলে আর্ট তো অর্থহীন। গানটা ইউটিউবে খুজে পাইতেছি না রে।

-দারে, এইগুলান তো ভদ্দরলোকের এলাকায় পাইবা না। এডাল্ট সাইট টাইটে পাইবা সার্চ করলে। আমি ঐদিন আরেকটা সিমিলার পাইলাম। ঐটার লিরিক্স আবার “যৌবন একটা গোল্ডিফ সিগারেট”।

= কি কস ! যৌবন একটা গোল্ডলিফ সিগারেট? আয় হায়, কে লিখছে এইটা?

– কে লেখছে তা জানি না। এক ভিডিওর মধ্যে পাইলাম, শুনলে কউ, ভিপিএন নামাইতে হবে আবার ফোনে তোমারে এখন শুনাইতে হইলে।

= শিমুল, ব্যাপার টা হালকা ভাবে নিশ না। জীবন একটা গোল্ডিফ সিগারেট, সিগারেট টা পুড়ে যাচ্ছে, শেষ হয়ে যাইতেছে, রেখে যাইতেছে ছাই। বুঝতাছিস ব্যাপার টার গভীরতা?

– মানে ঐ সকল ফিলোসফির মুল ফিলোসফির কথা কইতেছো? যাই করো, একদিন তো মইরাই যাবা? ঐটা?

= ঠিক ঐটা না, বাট সিমিলার রে ব্যাটা। বাট এইটার অর্থ আরো ডিপ, সিগারেট তো অটো পুড়তেছে না রে, কেউ আগুন লাগাইছে। আগুন কে লাগাইলো, কেন লাগাইলো সেইটা নিয়া তর ধারনা কি?

– ভাই, তুমি তো লালন দর্শনে চইলা যাইতেছো। লালন তো সারাজীবন এই প্রশ্নের উত্তর খুইজা মইরাও গেলেন, কে লাগাইলো এই আগুন? নাকি হাসন রাজা রে কে বাউলা বানাইলো?

= হুর ব্যাডা, হাসন রাজায় তো রোমান্টিক ক্যারেক্টার, তার খোজে মানুষ, মানুষের উপরে কিছু খুজেন নাই তিনি, তারে লালনের সাথে এক লাইনে নাম নিলি কেমনে? নাকি মানুষের উপরে আর কিছু নাই?

– আছে মনে হয়। আশরাফুল মাখলুকাত মানে তো সেরা সৃষ্টি। লাইক ধরো ওল্ড টেস্টামেন্টে একদম এঞ্জেল রা পর্যন্ত এদের নিয়া চিন্তিত ছিলো, কুরআনে তো তাগোরে দিয়া আল্লাহ মানুষ রে সেজদাহ পর্যন্ত করাইলো। মানুষের মধ্যে একটা ব্যাপার আছে বুঝছো ভাই, সামথিং স্পেশাল। সঠিক শব্দ খুজে পাইতেছি না প্রকাশ করার জন্য।