আমরা টেকি পিপল রা যে বাবল টায় বাস করি, সেটার বাইরে একটা বিশাল পপুলেশন আছে সেইটা কেন জানি ভুলে যাই অনেকে। তারা সিরিয়াসলী ই জানেন না তার নেক্সট ফোনটার প্রসেসর স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ওয়ান নাকি টু। দে ডন্ট ইভেন কেয়ার। তার একটা সমস্যা আছে, তার ফোন নাই। তিনি দোকানে যাবেন, সেলসম্যান তার বাজেট জেনে তাকে যেটা কিনতে বলবে, দামাদামি করে কিনে বাসায় ফিরবেন।
ইভেন ইদানিং এপলের যে বাবল টা দেখতেছি, হাতে হাতে ১৩, ১৪ সিরিজের আইফোন। এই ইউজারদের বেশীরভাগের ধারনা নাই তাদের হাতের ফোন টার প্রসেসর একটা রোবট যেটা মংগল গ্রহে গিয়ে আমাদের ছবি পাঠায়, সেটার থেকে বেশী শক্তিশালী। তাদের কাছে সেটা স্ট্যাটাস সিম্বল, লেটেস্ট আইফোন টা তার আছে,ব্যাস।
সিরিয়াসলী ভাই, বাংলাদেশে আপনার ফ্রেন্ডব্যাসেই কয়জন মার্কাস ব্রাউনলি বা লাইনাস সাবাস্টিন কে চেনেন? তাদের কন্টেন্ট দেখেন?
তাতে কি তারা পিছিয়ে পড়ছেন? আমার মনে হয় না। যে যার লাইফ নিয়া দিব্যি খুশী আছেন, অফিস কি ব্যাবসায় প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছেন, কাজ করছেন, বাসায় ফিরছেন, পরিবার কে সময় দিচ্ছেন, দ্যাটস ইট। তার লাইফ রে টেকি করার কোন প্রয়োজন দেখি না আমি।
এইরকম বাবল নানা যায়গায় আছে। আমার পরিচিত রা একসাথে হইলে ধরেন আলোচনা শুরু করলো কোন টিভি সিরিজ নিয়ে, এন্ড আমার সেটা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারনা নাই। ব্যাস, আমি আউট অফ দ্যাট বাবল। আবার আমি আর আমার ফ্রেন্ড নতুন ডিসকভার করা কোন ব্যান্ডের গানে কাদের ইনফ্লুয়েন্স আছে তা নিয়া কথা বলতেছি, আরেকজন এগুলার কিছুই কেয়ার করে না, সে আউট অফ বাবল।
এগুলান বাংগালীর নিজস্ব কালচার আমি জানি। আমাদের গ্রামের চায়ের দোকান, কি শহরের টং এ একটা করে টপিক নিয়া আলোচনা হইতো। সে পর্যন্ত ঠিক ছিলো, সবাই একটা টপিকে অবগত থাকতো, এখন গ্লোবাইলাইজেশনের যুগে আইসা সেই পরিবেশ আশা করলে মারাত্বক ভুল করা হবে।
আমি দুইদিন আগে ম্যান্ডালোরিয়ান একটা মিমস শেয়ার করলাম। এখন তার কনটেক্সট বুঝতে হইলে একটা মানুষের স্টার ওয়ার্স ইউনিভার্স টা সম্পর্কে জানা লাগবে। স্টার ওয়ার্সের কনসেপ্ট বুঝতে হইলে আবার Dune এর কনসেপ্ট বুঝা লাগবে। দুনিয়ার সব মানুষ এই এক টপিক নিয়া মাথা ঘামাবে না এইটা তো সহজে বুঝার কথা আপনাদের।
তো ইয়া, আমি এতদিনে যেয়ে ব্যাপার টা ইজিলি মেনে নিতে শিখছি। আমার অমুক কাল্ট ক্লাসিক ডিরেক্টর এর মুভি টা দেখা নাই, ন্যাচারাল। আপনার হাতে ফেইসলেস চাইনিজ মেড ঘড়ি থাকতেই পারে, ন্যাচারাল, আমার পৃথিবীর কোথাও এক অজানা যায়গায় একটা বিটকয়েন ওয়ালেট থাকতেই পারে যেইটায় পয়েন্টের বামপাশে সংখ্যা দুইটা, এইটাও ন্যাচারাল হইতে পারে, আবার কারো ক্রিপ্টো কি জিনিষ, ব্লকচেইন কি জিনিষ সেইটা নিয়ে বিন্দুমাত্র ধারনা না থাকাও ন্যাচারাল।
আমি মিউজিক নিয়া মাথা ঘামাই প্রচুর, রাইট? সো আমি ম্যাক্সিমাম টাইম যাদের গান শুনি, তাদের অনেক কেই আমার পরিচিত রা চিনবে না এইটাই তো স্বাভাবিক। আবার আমার যে বন্ধুটার হবি বই পড়া, সে এমন এমন বই পড়ে, সেগুলার নাম ই আমি কোনদিন শুনি নি, এটাও অতি স্বাভাবিক। এতে আমি বা সে কেউ ই আনকালচার্ড হয়ে যাই না।
সো আমি যখন বলি যে ভাই AES 256 বিট এনক্রিপশন কি জিনিষ আপনি বোঝেন না, মেনে নেন। দ্যাটস নট ইউর থিং, রাইট? আবার আমি গেম অফ থ্রোন্স এর একটা এপিসোড ও দেখি নাই, এইটাও ন্যাচারাল, দ্যাটস নট মাই থিং। আপনি আপনার টা করেন, এঞ্জয় করেন, অন্যদের তাদের টা করতে দেন। জীবন সহজ হয়ে যাবে বেশ খানিক টা।